1. admin@www.independentbd.news : independentbd.news : News Desk
  2. sheikhnadir81@gmail.com : sk deen mahmud : sk deen mahmud
দূর্গোৎসবে বাড়তি নজর কাড়বে কপিলমুনির প্রাণ পূরুষ রায়সাহেবের জীবন চিত্রের ভাষ্কর্য - independentbd.news
শুক্রবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯:৪২ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ :
পাইকগাছায় ৮ দলীয় হা ডু-ডু’র ফাইনাল খেলায় লস্কর একাদশ চ্যাম্পিয়ান সবার মাঝে দেশের উন্নয়নে কাজ করার মানসিকতা থাকা দরকার -সিটি মেয়র পুলিশ সুপার রবিউল ইসলামের মর্যাদাপূর্ণ পিএসসি কোর্স সম্পন্ন মাউন্ট মঙ্গানুইয়ের স্মৃতি ফিরছে সিলেটে, জয় থেকে মাত্র ৩ উইকেট দূরে টাইগাররা পাইকগাছা-কয়রা বাসীর উদ্দেশ্যে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থীর খোলা চিঠি বিএনপির কেন্দ্রীয় ১৫ নেতাসহ সাবেক ৩০ এমপি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন জেল থেকে বেরিয়ে নৌকা প্রতীক পেলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর খুলনায় ছয়টি আসনে ৫৩ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল নীলফামারী-৪ আসন: ৯ জনের মনোনয়ন দাখিল- আ’লীগ জাপার একাধিক প্রার্থী খুলনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত

দূর্গোৎসবে বাড়তি নজর কাড়বে কপিলমুনির প্রাণ পূরুষ রায়সাহেবের জীবন চিত্রের ভাষ্কর্য

শেখ দীন মাহমুদ::
  • প্রকাশিত: শনিবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৩
  • ৩০ বার পড়া হয়েছে

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গাপূজা বা দূর্গোৎসব। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জনপদ খুলনার কপিলমুনিতে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও দূর্গোৎসবকে সামনে রেখে শুরু হয়েছে সাজ সাজ রব। দূর্গাপূজা মূলত সনাতনীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব হলেও জনপদে সেই স্মরণাতীতকাল থেকে সার্বজীনন বাঙালির উৎসব হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। এক কথায় ধর্ম যার যার উৎসব যেন সবার।

সনাতনীদের মধ্যে দূর্গাপূজাকে আবার বড় পূজা হিসেবেও দেখা হয়। পূজার পাশাপাশি মূর্তির সৌন্দর্য বর্ধন, মন্ডপ, সাজস্বজ্জা, আলোকস্বজ্জা ও গেট তৈরিতেও স্ব-স্ব কর্তৃপক্ষ এক অলিখিত প্রতিযোগীতায় নেমে পড়ে। পূজারী দর্শনার্থীদের দৃষ্টি আকৃষ্ট ও মন কাঁড়তে পূজার পাশাপাশি বাড়তি আযোজন করা হয় ধর্মীয় যাত্রাপালার সাথে সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠান। স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তি-বর্গ, স্থান বা ইতিহাস-ঐতিহ্যকেও প্রাধান্য দেওয়া হয় পূজার পাশাপাশি বাড়তি আয়োজনে।

এতে দর্শনার্থী পূজারীদের কাছে মূল পূজার পাশাপাশি উঠে আসে স্ব-স্ব এলাকার ঐতিহ্য ও বিশিষ্টজনদের জীবনী ও তাদের কর্মযজ্ঞ সম্পর্কে। এবারও তার ব্যাতিক্রম হয়নি। মূর্তি ও মন্ডপের সৌন্দর্য বর্ধনের পাশাপাশি প্রতিযোগীতায় উঠে এসেছে গেট। তবে এবার পূজায় উপজেলার কপিলমুনিস্থ মিলন মন্দির কেন্দ্রীয় পূজা মন্ডপ কর্র্তৃপক্ষ মূল পূজার পাশাপাশি দর্শনার্থীদের জানান দিতে উপস্থাপন করেছে একটি ব্যতিক্রমী বিষয়। যা সনাতনীদের পাশাপাশি ভিন্নধর্মাবলম্বীদের মাঝেও দারুণভাবে নাড়া দিয়েছে। মিলন মন্দির প্রগতি সংঘের ব্যানারে তারা এবার তুলে এনেছে আধুনিক কপিলমুনির রুপকার জনপদের সাধারণ মানুষের প্রাণ পূরুষ স্বর্গীয় রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধুকে।

এবার পূজায় মূল ধর্মীয় আচার ও রীতি অনুযায়ী ২ কার্তিক (২০ অক্টোবর) শুক্রবার মহাষষ্ঠীতে সন্ধ্যা ৬ টায় মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্বলন ও চ-ীপাঠ, সন্ধ্যা ৭ টায় শ্রীমদ্ভবত গীতার শ্লোক স্তব। ৩ কার্তিক (২১ অক্টোবর) শনিবার মহা সপ্তমীতে সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা, গান ও নৃত্যানুষ্ঠান। ৪ কার্তিক (২২ অক্টোবর) রবিবার মহা অষ্টমীর সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় দেশের এক সময়ের একমাত্র যাদু চক্র জোনাকি যাদু চক্রের যাদু প্রদর্শনী ও সাতক্ষীরা সঙ্গীত একাডেমীর পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সঙ্গীতানুষ্ঠান। এতে যাদু প্রদর্শন করবেন, বাংলাদেশের অন্যতম খ্যাতিমান জাদুশিল্পী যাদুজগতের উজ্জ্বল নক্ষত্র ‘জাদুসূর্য’ পি.সি.সাহা। ৫ কার্তিক (২৩ শে অক্টোবর) সোমবার মহানবমীতে সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় সংগীতানুষ্ঠান ও রাত ৯ টায় অনির্বাণ শিল্প গোষ্ঠীর পরিবেশনায় ‘‘নবরূপে মহা দুর্গা’’
তবে এবার পূজায় বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে মিলন মন্দির কেন্দ্রীয় পূজা মন্ডপে মিলন মন্দির প্রগতি সংঘ আধুনিক কপিলমুনির স্থপতি স্বর্গীয় রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধুকে উপস্থাপন করেছে ভিন্নরুপে। রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধু গোটা জীবন পরিক্রমার ভাস্কর্য প্রদর্শন করে জনপদের মূল পূজার পাশাাশ ব্যাতিক্রমী সংযোজনে অনন্য নজির স্থাপন করতে চলেছেন।

রায় সাহেব বেিনাদ বিহারী সাধু ১৮৯০ খৃষ্টাব্দের ২০ মে কপিলমুনিতে জন্মগ্রহন করেন। তার পিতার নাম যাদব চন্দ্র সাধু ও মাতার নাম সহচরী দেবী। তিনি ৪ ভাই ও ৩ বোনের মধ্যে ভাইদের সারীতে তৃতীয় ছিলেন।
ভাস্কর্যটির মাধ্যমে কর্তৃপক্ষ তার শৈশবের একটি খন্ড চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। যেখানে বাবা-মায়ের সাথে খেলার ছলে দেখা যাবে শিশু বিনোদকে।
রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধু ছিলেন, জনপদের অন্যতম শিক্ষানুরাগী। জন্মস্থান কপিলমুনি থেকে প্রতিদিন পায়ে হেঁটে প্রায় ৭কি:মি: দূরে কপোতাক্ষ নদ পেরিয়ে বিশ্ববরেণ্য বিজ্ঞানী স্যার আচার্য পিসি রায় প্রতিষ্ঠিত রাড়–লী আর.কে.বি.কে হরিশচন্দ্র ইনস্টিটিউটে অধ্যায়নে যেতেন। তিনি স্যার পিসির রায়ের আশীর্বাদপুষ্ট শিক্ষার্থী ছিলেন।

ভাস্কর্যের মাধ্যমে বিনোদের শিক্ষাজীবনের একটি খন্ড চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। যেখানে স্যার পিসি রায়কে প্রণাম করতে দেখা যাচ্ছে শৈশবের ক্ষুদে শিক্ষার্থী বিনোদকে।

শৈশবে স্কুলের পাঠ শেষ না করেই বিনোদ তার বাবার হাত ধরে ব্যবসা জীবনে পদার্পণ করেন। ব্যবসায়ীক দূরদর্শিতার পরিচয় দিতে গিয়ে ক্রেতা সন্তুষ্টি অর্জনে তিনি বিভিন্ন সময় নানা কৌশলের আশ্রয় নিতেন।

কেরোসিনের ব্যবসায় তৎকালীণ ক্রেতাদের হারিকেন ও কুপি (টেমি বা লম্প) জন্য বিনামূল্যে সলতে বিতরণ করতেন। ব্যবসা জীবনে এমন নানা ঘটনার জন্ম দিয়ে সফলতার স্বাক্ষর রাখেন। ভাস্কর্যে বিনোদের ব্যবসা জীবনের চিত্র তুলে ধরতে দু’জন ক্রেতাসহ তাকে দেখা যাবে কেরোসিন বিক্রি করতে।

রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধু ছিলেন, কপিলেশ্বরী মায়ের আশীর্বাদপুষ্ট। আধুনিক কপিলমুনির রুপকার ছিলেন তিনি। জনপদের ব্যবসা-বা্িয সম্প্রসারণে নিজ নামে প্রতিষ্ঠা করেন বিনোদগঞ্জ। জনশ্রুতি রয়েছে, একবার বারুণী মেলায় আগত শাঁখারি হতে বিনোদের কণ্যার রুপ ধরে বাকিতে শাঁখা পরে বাবা বিনোদের কাছ থেকে টাকা নিতে বলেন। বিনোদকে পেয়ে মেয়ের শাঁখার টাকা চাইতে কিঞ্চিত বিলম্ব করে টাকা পরিশোধ করে চলে যান কপিলেশ্বরী কালী মন্দিরে। সেখানে গিয়ে দেখেন মায়ের হাতে শাঁখা। তখন তার বুঝতে বাকি ছিলনা, শাখা নিতে সেই গিয়েছিল শাঁখারির কাছে। ভাস্কর্যে তাই শাঁখারির হাত থেকে কপিলেশ্বরী মায়ের শাঁখা পরা ও পিতা রূপে বিনোদকে তুলে ধরা হয়েছে।

এভাবে ক্ষণজন্মা বিনোদ ক্রমান্বয়ে একদিন হয়ে ওঠেন, রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধু হিসেবে। নানা কীর্তিগাঁথায় ব্রিটিশ সরকার তাকে এ উপাধিতে ভূষিত করে সম্মাননা প্রদান করেন।

মূলত বিনোদ তার জীবদ্দশায় নিজ নামে বিনোদগঞ্জ প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি মায়ের নামে কপিলমুনি সহচরী বিদ্যামন্দির, ব্যবসায়ীক লেনদেন ও ব্যবসায়ীদের সঞ্চয়ী করতে সিদ্ধেশ্বরী ব্যাংক, অমৃতময়ী মিলনায়তন, ভরত চন্দ্র হাসপাতাল, একমাত্র বেদ মন্দির, কপিলেশ্বরী মায়ের মন্দির পূণ:নির্মাণ, সহচরী সরোবর, দক্ষিণাঞ্চলে প্রথম এক্সরে মেশিন, প্রথম বৈদ্যুতিক বাতি প্রজ্জ্বলন জেনারেটরের মাধ্যমে। ভাষ্কর্যে তার কীর্তিগাঁথা অনেক কিছুই কৃর্তপক্ষ তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন ভাষ্কর্যের মাধ্যমে।

শারদীয় দূর্গোৎসবে মিলন মন্দির সার্বজনীন প্রগতি সংঘের পক্ষে এবারও বর্ণাঢ্য আয়োজন রয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে শারদীয় মায়ের প্রতীমা। ধারণা করা হচ্ছে, এবার জেলার শ্রেষ্ট প্রতীমার মর্যাদা পাবে। পাশাপাশি ভাষ্কর্যের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে আজকের কপিলমুনি তথা বিনোদগঞ্জ’র প্রতিষ্ঠাতা দানবীর স্বর্গীয় রায় সাহেব বিনোবিহারী সাধুর জীবন চিত্র। যা পূজারী দর্শনার্থীদের বিনোদ বিহারী সম্পর্কে জানতে বাড়তি অনুপ্রেরণা যোগাবে।

এব্যাপারে মিলন মন্দির, মিলন মন্দির প্রগতি সংঘ তথা আজকের আয়োজনের অন্যতম ছাঁয়া সূতিকাগার তরুণ ব্যবসায়ী বিপ্লব সাধু বলছিলেন, জনপদে কবে কখন থেকে সনাতনীদের বসবাস শুরু তার সঠিক ইতিহাস জানা না থাকলেও দ্বাপর যুগে কপিলদেবের তপধ্যানে সিদ্ধিলাভের সময়ও জনপদে সনাতনীদের বসবাসের স্বাক্ষরবহন করে নানাভাবে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মেলবন্ধন হিসেবে পাশাপাশি নানা ধর্মের বসতি ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে আলাদা আলাদা শান্তিপূর্ণ উপাসনা সত্যিই সম্প্রীতির স্বাক্ষর বহন করে।

এসময় তিনি দর্শনার্থী-পূজারীদের পাশাপাশি সকলকে উৎসবে শান্তিপূর্ণ সামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মিলন মন্দির, মিলন মন্দির প্রগতি সংঘ, শিল্পী, কলা-কূশলীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে কৃতজ্ঞতা, শুভকামনাসহ দীর্ঘায়ু কামনা করেন।

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জনপদে শারদীয় দূর্গাপূজা উদযাপিত হোক চিরাচরিত বাঙালির সার্বজনীন উৎসব হিসেবে এমনটাই প্রত্যাশা পূজা উদযাপন কমিটি, সনাতনীসহ সব সম্প্রদায়ের মানুষের।

 

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন

ওয়েবসাইট নকশা প্রযুক্তি সহায়তায়: ইন্ডিপেন্ডেন্টবিডি আইটি টিম

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত: ইন্ডিপেন্ডেন্টবিডি মিডিয়া কর্পোরেশন লিঃ