1. admin@independentbd.news : admin :
বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১০:৩৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
ছাত্রদলকে শিবির সভাপতির কড়া বার্তা গাজায় আরও ৬ লাশ উদ্ধার, রাফায় ২ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েল পাইকগাছায় জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশে জামায়াত এখনও বৈষম্যের শিকার: গোলাম পরওয়ার কপিলমুনির প্রভাবশালী আ’ লীগ নেতা নির্মল ঠাকুর গ্রেফতার আগামীতে ঐক্যবদ্ধ বিএনপির নেতৃত্বে মিছিল হবে একটাই, কয়রায় বিএনপির কর্মী সভায় জেলা বিএনপির আহবায়ক মন্টুু মুন্সীগঞ্জে আসলাম সুইটকে তিন লক্ষ টাকা জরিমানা দেশের বর্তমান সংকট থেকে উত্তরণে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ সংসদ নির্বাচনের কোন বিকল্প নেই-সৈয়দপুরে এমরান সালেহ প্রিন্স কয়রায় কোষ্টগার্ডের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও প্রয়োজনীয় ওষুধ বিতরণ তরুণ প্রজন্মের জনপ্রিয় অভিনেতা শেখ ফরিদ পলক এবার হলিউডের পর্দায়

খর্নিয়ায় ডিপো থেকেই চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ, অজ্ঞাত কারণে নীরব প্রশাসন

  • প্রকাশের সময়: শনিবার, ২৫ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ৩০ বার পঠিত

‌‌শেখ মাহতাব হোসেন,ডুমুরিয়া:


খুলনার ডুমুরিয়ার খর্নিয়ায় প্রকাশ্যে ডিপো থেকেই করা হচ্ছে  চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ। যদিও উপজেলার বেশকিছু এলাকায় চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ ঠেকাতে বিভিন্ন সময়ে মোবাইল কোর্টে জরিমানা করা হলেও অজ্ঞাত কারণে বাদ পড়েছে খর্নিয়া এলাকার চিংড়ির ডিপো গুলো। আর সেটিই অসাধু ডিপো মালিকদের এমন শাহস দেখানোর অন্যতম কারণ হিসেবে মনে করছেন সচেতন এলাকাবাসী।

তাদের ধারণা, উপজেলার খর্নিয়া বাজারে মোবাইল কোর্ট পরিচালনায় চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশের বিষয়টি পরীক্ষা করা হলে এক দিনেই কয়েক শ’ কেজি অপদ্রব্য পুশকৃত মাছ ধরা পড়বে।

তথ্য অনুসন্ধানে জানাযায়, বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম খাত হিমায়িত চিংড়ি রফতানি। হোয়াইট গোল্ড নামে খ্যাত এ পণ্যের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত প্রায় দেড় কোটি মানুষ। আর এ পণ্যের সিংহভাগ রফতানি হয় বৃহত্তর খুলনা অঞ্চল থেকে। যদিও ৬০-এর দশকে খুলনা অঞ্চলে চিংড়ি চাষ শুরু হলেও ১৯৯০ সালের শেষের দিকে এ অঞ্চলে চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশের অভিযোগ ওঠে।

অভিযোগে বলা হয়, অসাধু ব্যবসায়ীরা অধিক লাভের আশায় চিংড়িতে জেলি, ফিটকিরির পানি, ভাতের মাড়, সাগু, এরারুট, লোহা বা সিসার গুলি, মার্বেল, ম্যাজিক বল, জেলিসহ বিভিন্ন ধরনের পদার্থ মিশিয়ে এক ধরনের তরল পানীয় তৈরি করে চিংড়িতে পুশ করছে।

উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ করা বন্ধে বিভিন্ন সময় অভিযান পরিচালনা করেও ফল মিলছে না। গত ২৮সেপ্টেম্বর কাজী সামসুর রহমান মৎস্য আড়টে চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ করার অপরাধে ৪০হাজার টাকা জরিমানা ও ৩ হাজার চিংড়িতে কেরোসিন মিশিয়ে নদীতে ফেলে বিনষ্ট করা হয়। গত ৩০আগষ্ট মালতিয়া মোড়ে মিজানুর রহমানের ডিপুতে চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ করার অপরাধে ৫ হাজার টাকা জরিমানা ও ২০কেজি চিংড়িতে কেরোসিনের সাহায্যে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়। গত ১আগষ্ট কাঁঠালতলা বাজারের ডিপো মালিক বকুল জোয়াদ্দারের ডিপোয় চিংড়ি ভিজিয়ে রাখার অপরাধে ২০হাজার টাকা জরিমানা এবং উক্ত ডিপোয় চিংড়ি বিক্রি করতে আসা ব্যবসায়ী স্বপন মন্ডলের চিংড়ি পরীক্ষা করে পুশ ও জেলি পুশ অপরাধে তাকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। গত ২৭ জুলাই আঁঠারমাইল বাজার মৎস্য আড়তে মাছে পুশ করার অপরাধে ৩জনকে জেল জরিমানা ও ১৫০কেজি মাছ নদীতে ফেলে দেয়া হয়। গত ২৫জুলাই চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ করার অপরাধে ১জনকে ৭দিনের জেল এবং আরেকজনকে ১৫দিনের জেল দেয় ভ্রাম্যমান আদালত।

ডুমুরিয়া অঞ্চলে হাজার হাজার ডিপো রয়েছে। যদিও এ অঞ্চলের কিছু কিছু ডিপোতে চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশের অভিযোগ রয়েছে। কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা মাছে অপদ্রব্য পুশ করে এসব মাছ বিভিন্ন কোম্পানিতে বিক্রি করেন। এসব মাছ প্রক্রিয়াজাতকরণ কোম্পানি ফেরত দিলে তা চলে যায় দিনাজপুর, পঞ্চগড়, বগুড়াসহ উত্তরবঙ্গ, ঢাকার সাভার, সদরঘাট, কারওয়ান বাজার, চট্টগ্রাম, চাঁদপুর, কক্সবাজার,পটুয়াখালী ও ফেনীসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে। যা খেয়ে অসুস্থ হওয়ার পর বুঝতে পারে অপদ্রব্য পুশকৃত চিংড়ি খেয়ে তারা সাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছেন।

উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্র আরও জানায়, বাংলাদেশের চিংড়ির অন্যতম বাজার ফ্রান্স, চীন, জাপান, ইতালি, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি, বেলজিয়াম, তাইওয়ান, ডেনমার্ক, আয়ারল্যান্ড, সুইডেন, মরিশাস, সংযুক্ত আরব-আমিরাত, পর্তুগাল, অস্ট্রিয়া, সাইপ্রাস ও ডোমিনিকান রিপাবলিক । তবে এসব দেশ বর্তমানে মাছের গুণগত মান সম্পর্কে প্রশ্ন তুলছেন। যার ফলে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন।

ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আল আমিন বলেন, খুলনার ডুমুরিয়া, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলা চিংড়ির জন্য বিখ্যাত। চিংড়ি বাংলাদেশের হোয়াইট গোল্ড হিসেবে পরিচিত। খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা থেকে চিংড়ি দেশের নানা প্রান্তে সরবরাহ করা হয় এবং বিদেশেও রফতানি হচ্ছে। তবে অসাধু ব্যবসায়ীরা বেশি লাভের আশায় চিংড়িতে ক্ষতিকর অপদ্রব্য পুশ করে ওজন বাড়াচ্ছে। তবে চিংড়িতে অপদ্রব্য মিশ্রণকারীদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযানচলছে। ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে। এছাড়া ডুমুরিয়ায় কয়েকটি অভিযানে আমরা সহযোগীতা করেছি ও‌ কয়েক জন কে জেল জরিমানা করেছি।

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সোহেল মোঃ জিল্লুর রহমান রিগান বলেন, চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ বন্ধে মৎস্য বিভাগ সক্রিয় রয়েছে। তারা বিভিন্ন এলাকায় ঝটিকা অভিযান পরিচালনা করছে। জনবল স্বল্পতার কারণে অভিযান নিয়মিত করা দুষ্কর হচ্ছে। তারপরও প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

খবরটি শেয়ার করুন...

এই বিভাগের আরও খবর...