1. admin@independentbd.news : admin :
বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১০:২৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
ছাত্রদলকে শিবির সভাপতির কড়া বার্তা গাজায় আরও ৬ লাশ উদ্ধার, রাফায় ২ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েল পাইকগাছায় জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশে জামায়াত এখনও বৈষম্যের শিকার: গোলাম পরওয়ার কপিলমুনির প্রভাবশালী আ’ লীগ নেতা নির্মল ঠাকুর গ্রেফতার আগামীতে ঐক্যবদ্ধ বিএনপির নেতৃত্বে মিছিল হবে একটাই, কয়রায় বিএনপির কর্মী সভায় জেলা বিএনপির আহবায়ক মন্টুু মুন্সীগঞ্জে আসলাম সুইটকে তিন লক্ষ টাকা জরিমানা দেশের বর্তমান সংকট থেকে উত্তরণে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ সংসদ নির্বাচনের কোন বিকল্প নেই-সৈয়দপুরে এমরান সালেহ প্রিন্স কয়রায় কোষ্টগার্ডের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও প্রয়োজনীয় ওষুধ বিতরণ তরুণ প্রজন্মের জনপ্রিয় অভিনেতা শেখ ফরিদ পলক এবার হলিউডের পর্দায়

দ্রুত শুরু হচ্ছে সৈয়দপুর পৌরসভার ওযার্ড গুলোতে সড়ক ও ড্রেন নির্মাণ কাজ

  • প্রকাশের সময়: সোমবার, ২০ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ৩৫ বার পঠিত
402
মিজানুর রহমান মিলন,সৈয়দপুর :


উন্নয়নে ঝিমিয়ে থাকার পর অবশেষে সৈয়দপুর পৌর এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডের রাস্তা,ড্রেন ও অন্যান্য উন্নয়নমূলক কাজ শুরু হচ্ছে শিগগির।   এলজিসিআরআরপি কোভিড-১৯ পিজিবি প্রকল্পের আওতায় তিনটি প্যাকেজে ১৬ টি প্রকল্পে আরসিসি রাস্তাঘাট ও ড্রেণ নির্মাণ করা হবে। গত ১৩ জানুয়ারি ই- টেন্ডার প্রক্রিয়ায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছে আহবান করা দরপত্র খোলা হয়। যাচাই বাছাই শেষে লটারিতে টিকে যাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে খুব শিগগির কার্যাদেশ দেওয়া হবে। ২০২৪- ২০২৫ অর্থ বছরের এ প্রকল্পে ব্যয় হবে ৫ কোটি টাকা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে পৌরসভার প্রকৌশল দপ্তরের সুত্র।
সুত্রটি জানায়, সৈয়দপুরে দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থার কারণে মানুষজনের দুর্ভোগ চরমে ওঠে। একইসাথে শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থার কোন উন্নয়ন না হওয়ায় শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডের নীচু এলাকা সামান্য বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যায়। এছাড়া অনেক জায়গায় সারাবছরই জলাবদ্ধতাও লেগে থাকে। এনিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও জনগনের দুর্ভোগের বিষয়টি উঠে আসে। কিন্তু গত ৫ আগস্টের পুর্বে আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র রাফিকা আকতার জাহান কোন কিছুরই তোয়াক্কা না করে তাঁর খেয়াল খুশি মতো পরিষদ চালাতে থাকেন। সে সময় কিছু কিছু এলাকায় রাস্তাঘাট, ড্রেন নির্মাণ বা সংস্কার কাজ করলেও তা ছিল লোক দেখানো। উন্নয়নের নামে তিনি ছিলেন লুটপাটে ব্যস্ত। এনিয়ে কেউ প্রতিবাদ করলে আওয়ামীলীগের নেতাদের মাধ্যমে হুমকি ধামকিও দেওয়া হতো। বিনিময়ে মেয়র রাফিকা নেতাদের পিছনে ব্যয় করতো লাখ লাখ টাকা।
ওই মেয়রের অনিয়ম ও দূর্নীতি এতটাই বেড়েছিল যে সে সময় সৈয়দপুরে তার বিরুদ্ধে মিছিল সমাবেশও হয়। তখন তারই পরিষদের একটি বড় অংশ মেয়র রাফিকা আকতার জাহানের অনিয়মের বিরুদ্ধে আন্দোলনও করেন।
সুত্র জানায়, সে অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পায় পৌরবাসী। ছাত্র জনতার গণআন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে গেল বছরের সেপ্টেম্বর মাসে সরকারি আদেশে পৌর প্রশাসকের দায়িত্ব নেন সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নুর- ই- আলম সিদ্দিকী। তার পর থেকে পাল্টাতে থাকে পৌরসভার চিত্র। গতি আসে পৌরসভার কাজ কর্মেও। তিনি সুধিজনদের নিয়ে পৌরসভার উন্নয়নে চালিয়ে যান নানা তৎপরতা। এরই ধারাবাহিকতায় এলজিসিআরআরপি- কোভিড-১৯  প্রকল্পের মাধ্যমে পৌর এলাকার উন্নয়নে সম্প্রতি তিনটি প্যাকেজে ১৬ টি প্রকল্পে ই-টেন্ডারের মাধ্যমে দরপত্র আহবান করা হয়।
৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এসব প্রকল্পের আওতায় সৈয়দপুরের ১৫ টি ওয়ার্ডে রাস্তাঘাট ও ড্রেণ নির্মাণের কাজ করা হবে। সুত্র জানায়, এসব কাজের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো শহরের হাওয়ালদারপাড়া চাউল মার্কেট থেকে কাজীহাট ইদগাহ মোড় পর্যন্ত রাস্তা ও ড্রেন, হাতিখানা রোডের ফল মার্কেট থেকে পাঁচমাথা মোড় পর্যন্ত রাস্তা ও ড্রেন, শেরে বাংলা রোড চৌধুরী টাওয়ার মোড় থেকে তুলশীরাম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় যাওয়ার রাস্তা, থানার পিছনের কেফায়েতুল্লাহ সড়ক, মুন্সিপাড়া মহিলা কলেজ রোড, চিনি মসজিদ ইসলামবাগ এলাকার রাস্তা ও ড্রেণ, নির্মাণ করা হবে। এছাড়া বিভিন্ন ওয়ার্ডের জরাজীর্ণ রাস্তা, ড্রেণ নির্মাণ ও সংস্কার করা হবে এসব প্রকল্পের আওতায়। এজন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন রয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষের বলে সুত্র জানায়।
এদিকে সৈয়দপুর পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে রাস্তাঘাট, ড্রেন নির্মাণ কাজ শুরু হচ্ছে পৌর কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তে পৌরবাসীসহ ব্যবসায়ী ও সুধিসমাজ পৌর প্রশাসক ও ইউএনও মো. নুর- ই- আলম সিদ্দিকীসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। হাতিখানা রোডের ফল মার্কেটের পাইকারি ব্যবসায়ী মোতালের হোসেন বলেন, আমাদের মার্কেটের রাস্তাটি ছিল দীর্ঘদিন থেকে অবহেলিত। বিগত কয়েকটি পরিষদ দায়িত্ব পালন করে গেলেও আমাদের মার্কেটের রাস্তাটি নিয়ে কেউ চিন্তা করেনি। সামান্য বৃষ্টি হলেও চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়তো। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বর্ষাকালে রাস্তাটি সবসময় জলজটে থাকতো। তবে এবার পৌর প্রশাসক আমাদের মার্কেটের দিকে নজর দেওয়ায় দুর্ভোগের অবসান হবে। এজন্য তাঁর কাছে আমরা কৃতজ্ঞ । ব্যবসায়ী তোফায়েল মোহাম্মদ আজম বলেন, স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের সময় পৌরবাসী উন্নয়ন বঞ্চিত ছিল। যাও দু একটা কাজ হয়েছে তা ছিল লোক দেখানো। তৎকালীন পৌর মেয়র ও তার দলের লোকজন ছিল লুটপাটে ব্যস্ত। ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের অধ্যক্ষ শাবাহাত আলী সাব্বু বলেন, পৌর প্রশাসক নুর- ই- আলম সিদ্দিকী পৌরসভার উন্নয়নে যেসব পদক্ষেপ নিয়ে বাস্তবায়ন করে চলেছেন, তা সত্যই প্রশংসনীয়। এজন্য সকল শিক্ষক সমাজের পক্ষ থেকে পৌর প্রশাসককে অভিনন্দন জানান।
হাওয়ালদার পাড়ার বাসিন্দা ব্যবসায়ী নান্নু বলেন,, দীর্ঘদিন পরে হলেও এ সড়কের কাজ শুরু হবে জেনে আমরা এলাকাবাসী আনন্দিত। তিনি বলেন, আগে কাউন্সিলররা বিভিন্ন মেয়াদে দায়িত্ব পালন করলেও রাস্তাঘাট ও ড্রেন নির্মাণ করা হয়নি।  এলাকাবাসী এ নিয়ে আন্দোলন সংগ্রামও করেছে। কিন্তু পৌর পরিষদ ছিল নিশ্চুপ। তবে এবার আমাদের এলাকার রাস্তা ও ড্রেণ নির্মাণের জন্য টেন্ডার আহবান হওয়ায় আমাদের দূর্ভোগের অবসান হবে। ওই এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী জাহিদ ফয়সাল বলেন সড়কটি খানাখন্দ থাকার কারণে প্রায়ই ঘটতো দূর্ঘটনা। এটি নির্মাণ কাজ শেষ হলে সে আশংকা তেমন একটা থাকবেনা।
এদিকে সমাজকর্মী আশরাফুল হক বলেন, বর্তমান পৌর প্রশাসক শহরের রাস্তাঘাটের উন্নয়নে যেসব পদক্ষেপ নিয়েছেন তা সত্যি প্রশংসনীয়। এতে শহরবাসীর ভোগান্তি অনেকটা কমে যাবে। তবে শহরের অন্যান্য প্রধান প্রধান সড়কগুলোর কাজ যাতে দ্রুত শুরু করা হয় সেজন্য পৌর কর্তৃপক্ষকে আরও উদ্যোগী হওয়ার তাগিদ দেন।
পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শহিদুল ইসলাম ও সহকরি  প্রকৌশলী আব্দুল খালেক বলেন, পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নুর- ই- আলম সিদ্দিকীর দিক নির্দেশনায় পৌর এলাকার উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে এলাকার সকল উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন করা হবে।
জানতে চাইলে সৈয়দপুর পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নুর-ই- আলম সিদ্দিকী বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর পৌরসভা এলাকার রাস্তাঘাটসহ সার্বিক উন্নয়নে ব্যাপক পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সকলের সহযোগিতায় উন্নয়নমূলক কাজ বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি। এরই ধারাবাহিকতায় কোভিড-১৯ প্রকল্প এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি)  আওতায় বিভিন্ন এলাকার রাস্তাঘাট ও ড্রেন নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে, কিছু কাজ চলমান এবং চলতি আরও কিছু উন্নয়ন কাজ শুরু হবে। তিনি বলেন, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় কাজগুলো সম্পন্ন করতে চাই।

খবরটি শেয়ার করুন...

এই বিভাগের আরও খবর...